একটি লজ্জাজনক ইতিহাস: আওয়ামীলীগের অধীনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (২০০৯-২০২৩)
প্রদত্ত পিডিএফটি হলো - একটি লজ্জাজনক ইতিহাস: আওয়ামীলীগের অধীনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (২০০৯-২০২৩)
বিএনপি মিডিয়া সেল-এর একটি প্রতিবেদন, যার শিরোনাম "একটি লজ্জাজনক ইতিহাস: আওয়ামীলীগের অধীনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (২০০৯-২০২৩)"। এটি 'দা রোড টু ডেমোক্রেসি' নামক একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। এর বাংলা সংস্করণটি
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট-এর সৌজন্যে ছাপা হয়েছে ।
প্রতিবেদনটির মূল বিষয়বস্তু
এই প্রতিবেদনে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ঘটে যাওয়া প্রধান ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এটি তৈরি করা হয়েছে দৈনিক সংবাদপত্র, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য, ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য এবং ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগ নেতারা হয় সরাসরি এসব হামলায় জড়িত ছিলেন, নয়তো হামলাতে সহায়তা করেছেন। এমনকি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং কখনো কখনো স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহায়তা করেছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে, এই ধরনের ঘটনার জন্য মূলত সরকারের জবাবদিহিতার অভাবই দায়ী, যা বিগত ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীনতার সাথে যুক্ত।
প্রতিবেদনটিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য হামলার ঘটনার তালিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- ২০১২ সালের রামু, কক্সবাজারের ঘটনা: একটি ভুয়া ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে বৌদ্ধ মন্দির ও বাড়িতে হামলা চালানো হয়। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে যে এই হামলার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন।
- ২০২১ সালের দুর্গাপূজার সময় হামলা: প্রায় ১০ দিন ধরে চলা এই হামলায় প্রায় অর্ধশতাধিক মন্দির ও পূজামণ্ডপ ভাঙচুর করা হয়, যাতে চারজন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকসহ নয়জন প্রাণ হারান। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে যে এই হামলার সময় আওয়ামী লীগ নেতারা স্থানীয়দের উস্কানি দিয়েছেন।
এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ-এর সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত-এর মতে, ২০২১ সালে দুর্গোৎসবে হামলা হয়েছিল, কিন্তু ২০২২ সালে হয়নি। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, সরকার চাইলে হামলা হবে, না চাইলে হবে না।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও দাবি
পিডিএফটিতে
বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'-এর অঙ্গীকারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০১১ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.৬১% ছিল ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। কিন্তু ২০২২ সালের আদমশুমারিতে এই হার কমে ৭.৯৫%-এ নেমে এসেছে। প্রতিবেদনে এই হ্রাসকে আওয়ামী লীগের ১৪ বছরের শাসনের ফল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে হিন্দু মহাজোটের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, কেবল ২০২২ সালেই ১৫৪ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছিল। মানবাধিকার সংগঠন
আইন ও সালিশ কেন্দ্র-এর মতে, ২০১৩ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিন্দুদের উপর ৩৬৭৯টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এতে ১৫৫৯টি বাড়িঘর ও ১৬৭৮টি মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে এবং ১১ জন হিন্দুর মৃত্যু হয়।
0 Comments